স্টাফ রিপোর্টার: বিদ্যালয় বন্ধ রেখে পরিচালনা কমিটির সদস্যদের সাথে নিয়ে সপরিবারে কক্সবাজারে চার দিনের আনন্দ ভ্রমণ করছেন নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু উচ্চ বিদ্যালয়'র শিক্ষকরা।
গত বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে সোমবার (৩০ জানুয়ারি) পর্যন্ত মোট ৪ দিনের এই সফর করেন তারা।
সফরের চারদিনে মধ্যে শুক্র ও শনিবার দুদিন সরকারি ছুটি আর বাকী দুদিন রবি ও সোমবার বিদ্যালয় খোলার দিন থাকলেও সকল শিক্ষকরা এক সাথে কক্সবাজার সফরে থাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হয়।
এদিকে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রেখে শিক্ষকদের এই সফরের বিষয়টি অভিভাবক মহলে শুরু হয় সমালোচনা। আর সফরের জন্য বিদ্যালয় বন্ধ রাখার বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবগত করানো হয়নি ।
সোমবার সরেজমিনে উপজেলার মাহমুদাবাদ এলাকায় গিয়ে রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ থাকতে দেখা যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাবেক মন্ত্রী ও নরসিংদী-৫ সংসদীয় আসনের ছয় বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর নামে উপজেলার মাহমুদাবাদ এলাকায় ২০০০ সালে এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিদ্যালয়টি অত্যন্ত সুনামে সাথে পরিচালিত হয়ে আসছে। প্রায় ১১-১২ শ শিক্ষার্থীর এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে উপজেলার স্বনামধন্য একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি দায়িত্ব পালন করছেন এমপি রাজুর সহধর্মিনী কল্পনা রাজুদ্দিন।
ইতিমধ্যে বিদ্যালয়টিকে কলেজ পর্যায়ে উন্নীত করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যসহ সকল শিক্ষক সপরিবারে কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিন চারদিনের সফরে যায়।
৪ দিনের এই সফর এর দুইদিন সরকারি ছুটি থাকলেও বাকি দুই দিন যথারীতি স্কুলের পাঠদান বন্ধ রাখা হয়। শিক্ষকদের ওই সফরের কারণে বিদ্যালয় বন্ধ রাখায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে বলে মনে করচ্ছেন অভিভাবক মহল। তাইতো অভিভাবক মহলে শুরু হয় আলোচনা সমালোচনার ঝর। আর এই দুইদিন স্কুল বন্ধের বিষয়টি অবগত করা হয়নি উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তাকে।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফারুক মিয়া বলেন, সংরক্ষিত ছুটি মানি সরকারি ছুটি, আর এই সংরক্ষিত ছুটি আমাদের প্রাপ্য বিদায় কাটানোর নিয়ম আছে। আর এই সফরে আমাদের সাথে স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্যরাও ছিল। তবে যেহেতু আমরা শিক্ষার্থীদেরকে সাথে নেইনি তাই শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়নি।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি কল্পনা রাজিউদ্দিন বিষয়টি অবগত আছেন কিনা সে বিষয়ে জানতে তাকে বেশ কয়েকবার মোবাইল ফোনে বার বার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়ে হয়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাম আলমগীর আলম বলেন, 'ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পাওয়ার ডিজির চেয়ে বেশি। তিনি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করেন না। তার নামে প্রতিনিয়ত অভিযোগ আসে। এ বিষয়ে তিনি আমাকে কিছুই জানাননি। কোন প্রকার দুর্ঘটনা ঘটলে এর দায় দায়িত্ব কে নেবে? '
জাগো নরসিংদী/শহজু