স্টাফ রিপোর্ট: নরসিংদী সদর উপজেলার শীলমান্দী এলাকায় অবস্থিত ফুজিয়ান টেক্সটাইল মিলে কর্মরত চীনা নাগরিক প্রকৌশলী লি রংহুয়া (৫৭) দুর্ঘটনায় মারা যান।
গত ৩ মে এই দুর্ঘটনার পর খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার থেকে ক্ষতিপূরণের দাবিতে কারখানার সামনে অবস্থান নিয়েছেন চীন থেকে আসা নিহত প্রকৌশলীর স্ত্রী সন্তানসহ তিনজন।
এ ঘটনায় নরসিংদী মডেল থানায় গত ৫ মে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
নরসিংদী সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হারুন অর রশিদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ, নিহত প্রকৌশলীর পরিবার ও কারখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, চীনা মালিকানাধীন উচ্ছিষ্ট কাপড় থেকে সুতা তৈরি করা ওই কারখানায় কর্মরত ছিলেন চীনের জিয়াংসু প্রদেশের ফেংচেং টাউনের নাগরিক প্রকৌশলী লি রংহুয়া।
গত ৩ মে কর্মরত অবস্থায় কারখানার চলন্ত মেশিনে কাজ করার সময় দুর্ঘটনাবশত কাটাপড়ে দ্বিখন্ডিত হয়ে মারা যান তিনি। সিসিটিভি ফুটেজে এই দৃশ্য ধারণ হয়। দুর্ঘটনার পর ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ফ্রিজিং করে সংরক্ষণ করা হয়েছে তার মরদেহ।
শুক্রবার সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, চীনা মালিকানাধীন ফুজিয়ান টেক্সটাইলের সামনের ফটকে নির্বাক বসে আছেন নিহত প্রকৌশলীর স্ত্রী-সন্তান।
প্রকৌশলীর মৃত্যুর খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার থেকে কারখানার প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়েছেন চীন থেকে আসা তাঁর স্ত্রী ঝেং মেইলিং, পুত্র লি রংইয়ান এবং এক স্বজন। এই মৃত্যুর জন্য তারা কারখানা কর্তৃপক্ষের নিকট ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবী করছেন।
ইংরেজী ভাষায় দক্ষতা না থাকায় এই ঘটনায় পুরোপুরি অনুভুতি প্রকাশ করতে পারছেন না অবস্থান নেয়া স্বজনরা। তবে গুগুল ট্রান্সলেটে লিখে স্থানীয় সাংবাদিকদের বুঝিয়েছেন চীনের ঝেজিয়াং এর নাগরিক কারখানা মালিক তাদের স্বজন ওই প্রকৌশলীর মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ দিতে অনিহা জানিয়েছেন। স্থানীয়ভাবে তার বিরুদ্ধে মামলাও করতে বাধ্য হয়েছেন তারা। মৃত্যুর কারণ জানা ও ক্ষতিপূরণের দাবীতে দুই দিন ধরে কারখানার সামনে অবস্থান করছেন তারা।
ফুজিয়ান টেক্সটাইলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা নওশাদ আলম সাংবাদিকদের জানান, চীনা আইন অনুযায়ী এমন দুর্ঘটনায় ৮০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের বিধান থাকলেও তারা ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা দিতে সম্মতি হলেও প্রকৌশলীর পরিবারের সদস্যরা তা মানছেন না। তারা মরদেহ গ্রহণ করতে রাজি না হলেও শুধুমাত্র ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবীতে অনড় রয়েছেন।
নরসিংদী সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হারুন অর রশিদ বলেন, 'কারখানার ভেতরে কর্মরত অবস্থায় দুর্ঘটনায় কাটাপড়ে দ্বিখন্ডিত হয়ে ওই প্রকৌশলীর মৃত্যু হয়েছে। এখন তার স্বজনরা চীন থেকে এসে কারখানার ফটকে অবস্থান নিয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট অস্বাভাবিক ক্ষতিপুরণ দাবি করছেন, বিষয়টি কারখানা কর্তৃপক্ষকেই সমাধান করতে হবে।'
জাগোনরসিংদী টুয়েন্টিফোর ডটকম