রায়পুরা প্রতিনিধি: নরসিংদীর রায়পুরায় বাকসিদ্ধ আউলিয়া শাহ সুফি টকি মোল্লা (র:)'র মাজারে চলাচলের রাস্তা দখল করে বন্ধ করার প্রতিবাদে ভক্ত, আশেকান ও এলাকাবাসী মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে। প্রায় ৩০০ বছরের পুরাতন উপজেলার রাজপ্রসাদ গ্রামের টকি মোল্লা (র:)'র চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি দখলমুক্ত করার আহবান জানিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করা হয়।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে নরসিংদী প্রেসক্লাবের সামনে কয়েক শতাধিক নারী পুরুষের উপস্থিতিতে এডভোকেট খন্দকার হালিম'র নেতৃত্বে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে একই এলাকার স্বপন মিয়া ও তার লোকজনদের বিরুদ্ধে রাস্তা দখলের অভিযোগ করা হয়।
টকি মোল্লা'র আওলাদ খন্দকার রাজিব'র সঞ্চালনায় মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, নরসিংদী জজ কোর্টের সহকারি পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) খন্দকার হালিম, টকি মোল্লা (র:) মাজারের প্রধান খাদেম খন্দকার টিপু সুলতান, রায়পুরা ইউনিয়ন আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক সরকার, চান্দেরকান্দি ইউনিয়ন আ.লীগ সাধারন সম্পাদক আফিল উদ্দিন আপেল, হাবিবুর রহমান, তাজুল ইসলাম মুন্সি আবু, কাজী কামরুল, দুলাল ভান্ডারী, ফরিদা পারভীন, এমএম আলমগীর, সাইদুজ্জামান আঙ্গুর প্রমুখ।
মানববন্ধনে স্বপন মিয়ার বিরুদ্ধে রাস্তা দখল করার অভিযোগ তুলে বক্তারা বলেন, এখানে টকি মোল্লা (র:) ছাড়াও খন্দকার হযরত শাহ সুফি ছমিউল্লা (র:), খন্দকার হযরত শাহ সুফি সৈয়দ আলী (র:), খন্দকার হযরত শাহ সুফি জালাল উদ্দিন (র:)'র মাজার শরীফসহ দুইটি কবরস্থান রয়েছে। মাজারে যাতায়াতের জন্য ১২ফুট রাস্তা ৩শ বছর যাবত ব্যবহার করা হচ্ছে। যা ২২-২৩ অর্থবছরে স্থানীয় উন্নয়ন তহবিল থেকে ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ইটের সলিং ও মাটি ভরাটের সংস্কার কাজ করা হয়। দখলদাররা ১২ ফিট প্রস্থের এই রাস্তাটি দখল নিয়ে দুই পাশে কাঠ জাতীয় বৃক্ষের চারা রোপন করে। ফলে রাস্তাটি প্রায় অর্ধেকাংশ দখলে চলে গিয়ে তা সরু হয়ে পড়ে। যার ফলে মাজারের ভক্ত ও আশেকানদের চলাচলে অসুবিদার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। রাস্তাটি এতোটাই সরু হয় যে মৃত কোন ব্যক্তির জানাজার জন্য খাটিয়া বা ফ্রিজিং গাড়ি করে বহন করা সম্ভব হয়না। তাছাড়া বার্ষিক ওরশের সময় যে পরিমান ভক্ত, আশেকান ও সাধারণ মানুষের সমাগম হয় তখন প্রায় এ ৬ ফুটের এই সরু রাস্তা দিয়ে মানুষের চলাচলে বিঘ্ন ঘটবে। রাস্তা দখল মুক্ত না হলে পরবর্তীতে কোনো বিশৃঙ্খলা ঘটলে বা পরিস্থিতি সাংঘর্ষিক পর্যায়ে গেলে তার দায়ভার প্রশাসনকে নিতে হবে। এ অবস্থায় আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কোনো সুষ্ঠু সমাধান না করা গেলে রায়পুরা-সাপমারা সড়ক বন্ধ করে প্রতিবাদ করা হবে বলে বক্তারা বলেন। পরবর্তীথে সারাদেশের সুফিবাদীদের নিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করা হবে।
মানববন্ধন শেষে প্রেসক্লাবের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল সহকারে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যায় উপস্থিত ভক্ত, আশেকান ও এলাকাবাসী। পরে তাদের মধ্য থেকে ৭ জনের একটি প্রতিনিধি দল জেলা প্রশাসকের বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করেন। জেলা প্রশাসকে পক্ষ স্মারক লিপিটি গ্রহন করেন সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (নেজারত, ট্রেজারী এবং তথ্য ও অভিযোগ শাখা) এ কে এম হাসানুর রহমান।