• নরসিংদী
  • রবিবার, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

Advertise your products here

Advertise your products here

নরসিংদী  রবিবার, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ;   ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
website logo

কচুরিপানায় ভরে গেছে নরসিংদীর মেঘনা : নৌ চলাচলে দুর্ভোগ 


জাগো নরসিংদী 24 ; প্রকাশিত: শুক্রবার, ০৭ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০১:১৫ এএম
কচুরিপানায় ভরে গেছে নরসিংদীর মেঘনা : নৌ চলাচলে দুর্ভোগ 
মেঘনা নদীতে কচুরিপানা। ছবি : জাগো নরসিংদী

স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীর মেঘনা নদী কচুরিপানা ভরে গেছে। পুরো নদী কচুরিপানার দখলে থাকায় নৌ চলাচলে বিঘ্নসহ প্রায়ই বিভিন্ন রকম অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটছে। ফলে দুর্ভোগসহ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে জেলার  চরাঞ্চলবাসী।  এ অবস্থায় নরসিংদীর সাথে চরাঞ্চলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পথে। ফলে মেঘনার এই কচুরিপানা চরাঞ্চলবাসীর দু:খের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সরেজমিনে নরসিংদীর মেঘনা নদীতে গিয়ে দেখা যায়, নরসিংদী থানাঘাট হতে করিমপুর পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার নদীপথ  দখল করে নিয়েছে ভাসমান কচুরিপানা। এতে নরসিংদীর সাথে চরাঞ্চলের নৌ যোগাযোগ প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। ফলে গত বেশ কয়েকদিন ধরে ভোগান্তিতে পড়েছে চরাঞ্চলবাসি। 

ভুক্তভোগি চরাঞ্চলবাসী জানান, চরবাসীদের নিত‍্যপ্রয়োজনীয় পন্য, ঔষধ, কাচাঁ মালের সিংহভাগই আসে নরসিংদী থেকে। নৌকা যোগে এসব আনতে মারাত্মক দুর্ভোগের স্বীকার পোহাতে হচ্ছে তাদের। নদীর বুক জুড়ে ভাসমান কচুরিপানা থাকায় লঞ্চ, স্টিমার, ইঞ্চিন চালিত নৌকা চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। ইতোমধ্যে নরসিংদী থেকে বিভিন্ন রুটে চলাচলকারি কয়েক’শ স্পিডবোর্ট প্রায় বন্ধের পথে। এ অবস্থায় লোকজন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাদের গন্তব্যে পৌছাতে পারছেনা। আগে যেসব স্থানে যেতে সময় লাগত এক ঘন্টা এখন সেখানে যেতে সময় লাগছে ৩ থেকে ৪ ঘন্টা। 

জানা যায়, ভাসমান এসব কচুরিপানার উৎস হচ্ছে এক শ্রেণীর প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অবৈধ মাছের ঘের। আর ওইসব ঘেরের কচুরিপানা বাতাসে এসে জমা হয় নরসিংদী নদীবন্দরে। প্রতি বছরই এ সময়ে নরসিংদীর মেঘনা নদী দখল করে নেয় ভাসমান এই কচুরিপানা। যার ফলে প্রতিবছরই এমন দুর্ভোগে পড়তে হয় চরাঞ্চলসহ নৌপথে যাতায়তকারিদের। 

ইঞ্জিন চালিত নৌকার মাঝি হানিফা জানান, কচুরিপানার কারনে ঠিকভাবে নৌকা চালাতে পারেনা তারা । একটু পরপরই ভাসমান কচুরিপানার স্তুপে আটকে যায় নৌকা। এসময় লগি বৈঠা দিয়ে আটকে যাওয়া নৌকাকে মুক্ত করতে হয়। তাছাড়া যে গতিতে নৌকা চালায় তারা কচুরিপানার কারণে সেই স্বাভাবিক গতিতে চলাতে পারে না তারা।এতে গন্তব্যে পৌছতে নিদ্দিষ্ট সময়ের চেয়ে দুই তিন গুণ বেশী সময় লেগে যায়।

সোরহাব নামে অপর একজন মাঝি বলেন, ইদানিং কচুরিপানার পরিমাণ এতোটাই বেড়েছে যে গত এক সাপ্তাহ ধরে আমরা নরসিংদী যেতে পারিনা অর্ধেক পথে যাত্রি নামিয়ে দিতে হয়।  গত এক সাপ্তাহ ধরে বুদিয়ামারা মোড় এলাকা থেকে নাগরিয়াকান্দি ব্রিজ প্রায় দুই কিলোমিটার মধ‍্যে নৌকা চলাচল অনেকটা বন্ধ রয়েছে। দুই একটা নৌকা নরসিংদী কষ্টে পিষ্টে নরসিংদী ঘাট পর্যন্ত গেলে। ৫/৭ মিনিটের পথ যেতে সময় লাগে একঘন্টার বেশী

স্পিডবোর্ট চালক সুমন মিয়া বলেন, বর্তমানে নদীতে কচুরিপানা এতো বেড়েছে যার ফলে তাদের বোর্ট চালানোই প্রায় বন্ধের উপক্রম হয়েছে।

এ ব্যাপারে চরাঞ্চলের অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কচুরিপানার ছবি ও ভিডিও, পোস্ট করে বারবার কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছে। তাদের এ প্রচেষ্টা প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের দৃষ্টি-গোচর হয়েছে কি-না তা তারা জানেনা। আর যদি দৃষ্টি-গোচর হয়েও থাকে তবে কেন চরাঞ্চলবাসীরা এখনো দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, কেন এখনও এগিয়ে আসছেন না সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তা তাদের জানা নেই। 

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী নৌকার মাঝিরা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

এ বিষয়ে নরসিংদী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় ইন্দ্র সংকর চক্রবর্তীর সাথে  যোগাযোগ করলে তিনি বলেন,  'নদীতে অবৈধভাবে গড়ে তোলা মাছের ঘের থেকে এই কচুরপানা আসছে। এর জন‍্য আমরা অবৈধ দখলদার ও অবৈধ মাছের ঘের উচ্ছেদ করার পদক্ষেপ নিব। এ ব‍্যাপারে জেলা প্রশাসক মহোদয় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবেন বলে  বিষয়টি আমাদেরকে অবগত করেছেন।'

জাগো নরসিংদী/শহজু
 

নরসিংদীর খবর বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ