স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী তানজিনা আক্তার এখানে যোগদান করেছেন ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসের ৫ তারিখে। একই স্টেশনে দীর্ঘ আট বছর থাকার সুবাদে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবে হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। সরকারি নিয়মানুযায়ী এক স্টেশনে তিন বছরের বেশি থাকার কোন নিয়ম নেই। অথচ তিনি নিয়মনীতি ভঙ্গ করে দীর্ঘ আট বছর একই স্টেশনে কর্মরত রয়েছেন।
ইতিমধ্যে সহকারী প্রকৌশলী তানজিনা আক্তারের অনিয়ম নিয়ে জাতীয় দৈনিক ভোরের ডাক এবং স্থানীয় পত্রিকায় পরপর তিন-চারটি রিপোর্ট প্রকাশ হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এখনো তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
একই স্টেশনে দীর্ঘ আট বছর থাকার কারণে ঠিকাদারদের সাথে তাঁর একটি শখ্যতা গড়ে উঠেছে। সরকারের প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নিয়োজিত ঠিকাদারদের কাজ করার নিয়ম থাকলেও তানজিনা আক্তার মূল ঠিকাদারদের কাছ থেকে প্রকল্পের কাজগুলো সাব- ঠিকাদারি নিয়ে তাঁর অফিসের মেকানিক মিতুনসহ অন্যদেরকে দিয়ে সে কাজগুলো বাস্তবায়ন করেন বলে জানা গেছে। ফলে মিতুন মেকানিক একদিকে পাচ্ছে সরকারি বেতনভাতা, আর অন্যদিকে সাব-ঠিকাদারি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
এদিকে গত অর্থবছরে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে স্থাপিত গভীর নলকূপের কোনটিতে গরম পানি, কোনটিতে কাদা পানি উঠে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে বারবার অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাননি ভুক্তভোগীরা।
সারাদেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের অধীনে ২০২১-২২ অর্থবছরে গভীর এবং অগভীর মিলিয়ে মোট ৭০২টি নলকূপ বরাদ্দ পেয়েছে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। সে অর্থবছর শেষ হয়ে নতুন অর্থবছরের বরাদ্দও চলে এসেছে। কিন্তু গত অর্থবছরের কাজ এখনো শেষ করতে পারেননি। এরইমধ্যে প্রকল্পের অর্থ নয়ছয় করার অভিযোগ উঠেছে। তাছাড়া সহকারি প্রকৌশলী তানজিনা আক্তার নিয়মিত অফিস করেন না বলে জানা গেছে। সে সপ্তাহে দু তিন দিন অফিস করেন। তাও আবার বারোটার আগে অফিসে আসেন না। স্টেশনের কাছাকাছি থাকার নিয়ম থাকলেও সে তা না করে নরসিংদী শহরে বসবাস করেন।
গত অর্থ বছরের বরাদ্দ প্রাপ্ত দুলালপুর, সাধারচর এবং যোশর ইউনিয়নে মেকানিক মিতুন ১৯০টি নলকূপের কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন একটি সূত্র। যা সরজমিনে তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে। একটি গভীর নলকূপের পাটাতন-পাকাকরণ বাবদ বিল পাস হয় ৩৫ হাজার টাকা। আর এ ৩৫ হাজার টাকার স্থলে সাব-ঠিকাদার শাহিনকে সহকারী প্রকৌশলী দেন ১৯ হাজার টাকা। বাকি টাকা চলে যায় সহকারী প্রকৌশলী তানজিনা আক্তারের পকেটে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তানজিনা আক্তার তাঁর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেন।