স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীর রায়পুরায় যৌতুকের বলি গৃহবধূ আফসানা আফসার (২৮) হত্যা মামলার এজাহার ভুক্ত আসামি রিজন মিয়া (৪০) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৯ জুন) দিবাগত রাতে নরসিংদী সদর উপজেলার বাদুয়াারচর কান্দাপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত রিজন মিয়া বাদুয়ারচর কান্দাপাড়া এলাকার লাল ভূঁইয়ার ছেলে এবং সে মামলার এজাহারভুক্ত ৯নং আসামী। রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে গৃহবধূ আফসানা আফসার হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ঘাতক স্বামী হযরত আলী (৩৮) হত্যাকান্ডের পর পর মালয়েশিয়া পাড়ি জমিয়েছে। সেখান থেকে সে বার বার ফোন করে একেক সময় একেক রকম তথ্য দিয়ে মামলার বাদীকে বিভ্রান্ত করছেন বলে অভিযোগ করেছেন মামলার বাদি নিহত গৃহবধূ আফসানার মা হাসনা হেনা বেবি ।
তিনি বলেন, সে ফোন করে বলে তার সন্তানদের জন্য ব্যাংকে দশ লাখ টাকা ডিপোজিট করে রাখতে চায়। এর পরক্ষনেই সে ফোন করে জানায় সে একা এ হত্যার ঘটনাটি ঘটায়নি। সে করিমগঞ্জের রাজনীতির শিকার হয়েছেন। সে তার স্ত্রীকে হত্যা করার পর দুই বন্ধুর সহযোগিতায় সেখান থেকে পালিয়ে আসে।
পরে তারা বাড়ি থেকে পাসপোর্ট এনে তাকে মালয়েশিয়ার টিকেট কেটে দিলে রাতেই দেশ ছাড়ে সে। পাশাপাশি ফোন করে সে একথাও জানায় আগামী সোমবার দেশে ফিরে এসে হত্যার দায় শিকার করে আদালতের মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করবে।
উল্লেখ্য এর হযরত আলী বিদেশ থেকে এসে স্ত্রী আফসানাকে নতুন ঘর করবে বলে জানায়। তার জন্য আফসানার বাবার বাড়ি থেকে এক লাখ টাকা এনে দিতে বলে। এতে রাজি হয়নি আফসানা। বিদেশ যাবার আগেও আফসানা তার বিধবা মায়ের কাছ থেকে।
স্বামী হযরত আলীর কথায় রাজি না হওয়ায় তাদের উভয়ের মধ্যে প্রায়শ: বাক-বিতান্ডা ঘটনা ঘটতো। বাক-বিতান্ডার এক পর্যায়ে টাকা এনে না দিলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিত স্বামী হযরত আলী। পরে গত বুধবার (৭ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের নলবাটা এলাকায় স্বামী হযরত আলী নৃশংসভাবে গলাকেটে তার স্ত্রী আফসানা আফসারকে হত্যা করে বিদেশে পালিয়ে যায়।
পরদিন বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দুপুরে নিহতের মা হাসনা হেনা বেবি বাদী হয়ে ঘাতক স্বামীসহ ৯ জনের নাম উল্লেখপূর্বক আরও ২/৩ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে রায়পুরা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার দিবাগত রাতে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি রিজন মিয়া ওরফে রিজন ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় মামলার এজাহারভুক্ত ৯ নং আসামি রিজন মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।