মো. শাহাদাৎ হোসেন রাজু: চলতি বছরের শেষের দিকে অথবা ২০২৪ সালের শুরুতেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে প্রচার-প্রচারণাসহ মাঠ গোছাতে শুরু করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
নরসিংদী-১ সংসদীয় আসনে ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা তাদের প্রিয় নেতা নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের ১নং যুগ্ম সম্পাদক, সাবেক মেয়র কামরুজ্জামান কামরুলকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে দেখতে চায়। সাবেক মেয়র কামরুল ও নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ছবি সম্বলিত প্রচার পত্র হিসেবে বিল বোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে ইতোমধ্যে ছেয়ে গেছে পুরো জেলা। সড়ক, মহাসড়ক, অলিগলি পুরো জেলা আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য দলীয় এমপি প্রার্থী হিসেবে সাবেক মেয়র কামরুলের প্রচারণা।
দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের্রি এমন প্রচারণা জেলার আবাল, বৃদ্ধা, বণিতা সকলেই জানেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নরসিংদী-১ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হবেন মানবিক মেয়র খ্যাত নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সাবেক মেয়র কারজ্জামান কামরুল। আর এই আলোচনা জেলার হাটে-মাঠে সর্বত্রই। রাস্তার মোড়ে, অলিতে গলিতে চায়ের দোকানগুলো নির্বাচনী আলোচনা সরব। চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে দিয়ে ধোয়া তুলতে তুলতে একে অপরের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে নরসিংদী সদর কারা মনোনয়ন প্রত্যাশী হবে।
কে হবে আগামী নির্বাচনে নৌকার মাঝি। মেয়র কামরুল কী দলীয় মনোনয়ন নিয়ে আসতে আসতে পারবে? এমনই হরেক রকমে প্রশ্নে মুখর। সাধারণ মানুষের এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর। সে পর্যন্ত জেলাবাসী এমন প্রশ্ন আওড়াতে থাকবে।
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের একান্ত ইচ্ছার প্রাধান্য দিয়ে মেয়র কামরুজ্জামান দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হবেন বলে জানা গেছে।
জাতীয় সংসদে আসন নং ১৯৯ নরসিংদী-১ (সদর)। এই আসনটি নরসিংদী সদর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। জেলা সদরের এই আসনটি যে কোন রাজনৈতিক দলের কাছেই মর্যাদার ও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বিগত নির্বাচনগুলোর চেয়ে আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের চিত্র থাকবে অনেকটাই ভিন্ন। 'নৌকাতেই শেষ কথা, নৌকা মানেই জয়' এই নির্বাচনে এমনটা নাও ঘটতে পারে।
তাই আগামী নির্বাচনে এই গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় আসনটিতে প্রার্থী বাছাইয়ে সতর্ক থাকতে হবে দলের সর্বোচ্চ ফোরামকে। সর্বমহলে রয়েছে ব্যাপক গ্রহনযোগ্যতা এমন ব্যক্তির হাতেই দলীয় প্রতীক নৌকা তুলে দিয়ে মুনসিয়ানার পরিচয় দিবেন দলের হাই কমান্ড।
এমনটাই প্রত্যাশা সবার। সেই ক্ষেত্রে নরসিংদী সদরের সংসদীয় আসনটিতে সাবেক মেয়র কামরুজ্জামান কামরুলের বিকল্প দেখছে না নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মী। আসনটি নিজেদের দখলে রাখতে একমাত্র কামরুজ্জামান কামরুলই যোগ্য প্রার্থী বলে মনে করছেন তারা।
নরসিংদীর মানুষের কাছে করোনাযোদ্ধা মেয়র কামরুজ্জামান কামরুলের রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। বিগত সময়ে তিনি নরসিংদীবাসীর রায় নিয়ে পরপর দুইবার পৌর মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর পৌরবাসী উন্নয়নে কাজ করে গেছেন তিনি। সুখে-দু:খে তিনি তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
বিগত করোনাকালীন সময়ে নরসিংদীর অনেক বড় বড় নেতারা সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে নিজেদেরকে আড়াল করতে চার দেয়ালের মাঝে বন্দি থেকেছেন। সেই সময়ে মেয়র কামরুজ্জামান ছুটে বেড়িয়েছেন নরসিংদীবাসীর দ্বারে দ্বারে। নরসিংদীর কোন একটি মানুষ যেন খাবারে অভাবে কষ্ট না করে সে জন্য মানবতার ফেরিওয়ালা হয়ে এলাকার হতদরিদ্র, গরিব, অসহায় ও কর্মহীন মানুষের বাড়ী বাড়ী ঘুরে খাদ্যসামগ্রী তুলে দিয়ে এসেছেন সেই সকল মানুষদের হাতে।
প্রতিদিন শত শত মানুষের জন্য রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা করে অনাহারী মানুষদের আহার জুগিয়েছেন। করোনাকালীন সময়ে তার বিভিন্ন কর্মকান্ডে নরসিংদীবাসীর কাছ থেকে হয়েছেন প্রসংশিত, পেয়েছেন 'মানবিক মেয়র' নামের খেতাব। শুধু সাধারণ মানুষের কাছেই নয় তৃণমূলেও রয়েছে তার ব্যাপক গ্রহনযোগ্যতা।
তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কাছে তার এই গ্রহনযোগ্যতার কথা বিবেচনা করে জেলা আওয়ামী লীগের বিগত সম্মেলনে দলের নীতি নির্ধারকরা তাকে ১ নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব অর্পন করেন।
ছাত্রজীবন থেকে আওয়ামী ঘরণা রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন সাবেক মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল। রাজনীতিতে জড়িত হবার পর থেকে বিচরণ করেছেন সর্বত্র। দলকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে চষে বেড়িয়েছেন জেলার এ প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে। বিগত সময়ে বিভিন্ন নির্বাচনগুলোতে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে নৌকার পক্ষে জয় তুলে এনে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে করেছেন শক্তিশালী।
মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে দলের বিভিন্ন কর্মসূচিগুলো সফলভাবে পালন করেছেন। দলের যেকোন কর্মসূচিতে অন্য কাউকে মাঠে না পেলেও নেতাকর্মীরা মেয়র কামরুজ্জামানকে সাথে পেয়েছে সবসময়। আর সেই কারণে দলীয় নেতাকর্মীরা কোন দুধের মাছিকে নরসিংদী সদরের এই আসনে আর দেখতে চায়না। এ আসনে পরিবর্তন চাই দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ। নরসিংদী সদরের সর্বত্রই এখন পরিবর্তনের সুর।
নরসিংদী শহর যুবলীগের এক নেতা বলেন, আমরা সদরবাসি সুখে দু:খে যাকে সবসময় কাছে পেয়েছি এমন ব্যক্তির হাতেই নৌকা তুলে দেয়ার জন্য দলীয় প্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবী জানাচ্ছি।
নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগে সভাপতি এড. আসাদ উল্লাহ বলেন, নরসিংদী সদরের দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও হাজারো মানুষের পছন্দের প্রিয় নেতা সাবেক মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল। বর্তমান প্রজন্মের কাছে মেয়র কামরুজ্জামান আওয়ামী লীগের আস্থার প্রতীক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন।
কোন আমলা নয় বরং মেয়র কামরুজ্জামান নরসিংদী সদরে যোগ্য প্রার্থী বলে আমি মনের করি। আওয়ামী লীগ দলীয় প্রধান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনে মেয়র কামরুজ্জামানের হাতে নৌকা তুলে দিলে কোন ভুল হবেনা বলে আমি মনে করছি।
নরসিংদী শহর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, পৌর মেয়র আমজাদ হোসেন বাচ্চু বলেন, কামরুজ্জামান কামরুল একজন ভাল মানুষ হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত, এমন মানুষকে মনোনয়ন দিলে নির্বাচিত তো হবেনই পাশাপাশি সদর উপজেলার উন্নয়ন আরো বেগবান হবে।
নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা মোহাম্মদ আলী বলেন, দল যাকে মনোনয়ন দিবে আমি তার পক্ষে কাজ করে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করবো।
সাবেক মেয়র মো. কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে নরসিংদীর মানুষের পাশে থেকে তাদের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। দলীয় নেতাকর্মী ও আমার সমর্থকদের একান্ত ইচ্ছা আমি দলের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেই।
দলীয় নেতাকর্মীদের সেই ইচ্ছার প্রাধান্য দিয়ে আমি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হবো।
বিগত সময়ে আমার রাজনৈতিক কর্মকান্ড ও সদরবাসীর কাছে আমার গ্রহনযোগ্যতার বিষয়টি পর্যালোচনা করে আমার উপর আস্থা রেখে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে দলীয় মনোনয়ন দিলে আমি সেই আস্থার মূল্য দিয়ে এই আসনটি জননেত্রীকে উপহার দিতে পারব ইনশাআল্লাহ।
পাশাপাশি জননেত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে দলীয় নির্দেশনাগুলো মেনে সেই লক্ষে কাজ করে যাচ্ছি।
জাগোনরসিংদী টুয়েন্টিফোর ডটকম