স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীর পলাশে দ্বিতল বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সেন্টু সরকার (৫৫) নামে এক রং মিস্তিরির মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (১৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার জিনারদী বাজারের পাশে আমেরিকা প্রবাসী হারুন অর রশিদের দ্বিতল বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে তার মৃত্যু হয়।
তবে মৃত্যূর বিষয়টি স্বাভাবিক নাকি অস্বাভাবিক এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
নিহত সেন্টু সরকার জিনারদী এলাকার মৃত দীনেশ চন্দ্র সরকারের ছেলে। সে পেশায় একজন রং মিস্ত্রি।
নিহতের সহযোগী শ্রীবাস ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, অন্যান্য দিনের মতো সেন্টু সরকার রবিবার সকালে আমেরিকা প্রবাসী হারুনুর রশিদের বাড়িতে রঙের কাজ করতে যায়।
এ সময় তার সাথে শ্রীবাস চন্দ্র দাস নামে তার অপর এক সহযোগীও ছিল। বাড়িতে রং করতে আসলেও সে কাজ না করে দরজা জানালার পর্দার কাপড় ধোয়ার কাজে লেগে পড়ে সেন্টু ও তার সহযোগী। সেজন্য গরম পানি করে বড় পাতিলে ওয়াশিং পাউডার মিশিয়ে পর্দার কাপড়গুলো ভিজিয়ে রাখে।
সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পাতিল ভিজানো অবস্থা থেকে একটি পর্দা তুলে পিছন দিকে যেতেই বাড়ীর ছাদের রেলিংয়ের সাথে লেগে নিচে পড়ে যায়। পরে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে নরসিংদী ১০০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতাল নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জিনারদী এলাকার এক যুবক বলেন, "নিহত সেন্টু রং মিস্ত্রি হিসেবে প্রবাসী হারুণ সাহেবের বাড়িতে চুনকামে কাজ করছিল। বাড়ির রং দেওয়ার কাজ করতে এসে একজন রং মিস্ত্রি দরজা-জানালার পর্দা ধোতে যাবে কেন? এই বিষয়টি এখন সকলের সামনে প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া এতো উপর থেকে পড়ার পরেও নিহতের শরীরে কোন ভাঙগা বা থেথলে যাওয়ার চিহ্ন নেন। বিষয়টা আমাদের কাছে রহস্যজনক মনে হচ্ছে।
এব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জিনারদী ইউপি সদস্য শফিউদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি মোবাইল ফোনে জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি খুব দৌড়াদৌড়ির মধ্যে আছেন এ বিষয়ে পড়ে কথা বলবেন বলে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।
নরসিংদী জেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা পলাশ হোসেন মোল্লা বলেন, নিহত ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় আমাদের কাছে নিয়ে আসা হয়। তবে একজন ব্যক্তি অন্তত ২০ ফুট উপর থেকে পড়লে শরীরের হাত-পা ভাঙ্গা, থেথলে যাওয়া বা কাটা-ছিড়ার তেমন কোন চিহ্ন আমরা পাইনি।
পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, 'এ বিষয়ে নিহতে পরিবার ময়নাতদন্ত করতে ইচ্ছুক ছিলোনা। আমি তাদের প্রস্তাব মেনে না নিয়ে ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠাই। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যূর সঠিক কারণ জানা যাবে।'
জাগো নরসিংদী/শহজু