হলধর দাস: বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে নরসিংদীতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে ছিল আলোচনা সভা, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে সমগ্র জেলায় প্রদীপ প্রজ্বল, গরীব অসহায়দের মধ্যে কম্বল বিতরণ ছিল উল্লেখযোগ্য।
বৃহস্পতিবার(১৪ ডিসেম্বর)নরসিংদী জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম।
প্রধান অতিথির ভাষণে জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম বলেন, পাক হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতির বিভিন্ন পর্যায়ের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী আইনজীবী, শিল্পী, দার্শনিক ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদগণকে হত্যার মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে
মেধাশূন্য করেও থামিয়ে রাখতে পারেনি। আমরা জাতির পিতার যোগ্য উত্তরসুরী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছি। ২০৪১সালে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের পরিণত হবো। ২০৭১ সালে বাংলাদেশ হবে পৃথিবীর সেরা দেশ।
নরসিংদী'র অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট চিত্রা শিকারী'র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নরসিংদীর পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম ,বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালিব পাঠান, প্রফেসর মোহাম্মদ আলী, প্রফেসর গোলাম মোস্তাফা মিয়া, এলজিইডি'র নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার আসাদুজ্জামান,নরসিংদী প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোঃ নূরুল ইসলাম
প্রমুখ।
পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় নরসিংদী সার্কিট হাউস এর সামনে থেকে শুরু করে উপজেলা মোড় নরসিংদী প্রেস ক্লাব পর্যন্ত শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। সভায় উপস্থিত সকল অতিথি সহ জেলা পর্যায়ের সুধীজন সহ সকল স্তরের কয়েক হাজার লোক অংশগ্রহণ করে। অন্যান্য সুধীজনদের মধ্যে ছিলেন, নরসিংদী আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট কাজী নাজমুল ইসলাম, শিক্ষক নেতৃবৃন্দ,
একই সময়ে জেলার ৬টি উপজেলায় আলোচনা সভা ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করা হয়।
মহান মুক্তিযুদ্ধে পরাজয় নিশ্চিত জেনেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালী জাতিকে মেধা শূন্য করতে ১৫ নভেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত তারা তাদের এ দেশীয় দোষরদের নিয়ে শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, প্রকৌশলী, আইনজীবীসহ বহু মানুষকে হত্যা করে।
১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উদযাপন করতে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ৩১বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের শুভ সূচনা করা, জাতীয় পতাকা উত্তোলন,শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ,সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, নরসিংদী মুসলেহউদ্দিন ভূঞা স্টেডিয়ামে প্যারেড ও কুচকাওয়াজ,জাতির পিতার স্বপ্নের "সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে জাতীয় সমৃদ্ধি অর্জন” শীর্ষক আলোচনা সভা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের সংবর্ধনা,শিক্ষার্থীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনী,
শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত/যুদ্ধাহত ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সু-স্বাস্থ্য এবং জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে সকল মসজিদে বাদ জোহর মোনাজাত এবং অন্যান্য উপাসনালয়ে
সুবিধাজনক সময়ে প্রার্থনা জেলার সকল হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, ডে কেয়ার ও শিশু বিকাশ কেন্দ্র এবং শিশু ও ভবঘুরে প্রতিষ্ঠানসমূহে উন্নতমানের খাবার সরবরাহ,জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে ক্রীড়া অনুষ্ঠান, প্রীতি ফুটবল ম্যাচঃ জেলা প্রশাসক একাদশ বনাম মুক্তিযোদ্ধা সংসদ একাদশ,জেলা শিল্পকলা একাডেমি, জেলা শিশু একাডেমি, বাঁধনহারা থিয়েটার স্কুল ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিক্ষার্থীদের নিয়ে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক পরিবেশনা/সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এছাড়াও, রাতে নরসিংদী রেল স্টেশন সহ বিভিন্ন স্থানে গরীব অসহায় শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম।