স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীর মাধবদীতে পারিবারিক কলহের জের ধরে আব্দুল গফুর (৮৫) নামে এক বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারী) সকালে মাধবদী পৌর এলাকার ছোট গদাইরচর এলাকায় এই হত্যার ঘটনা ঘটে।
এদিকে বৃদ্ধ আব্দুল গফুর হত্যার ঘটনায় তার ছেলে ও মেয়েরা একে অন্যের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছে। তবে তাকে বা কারা হত্যা করেছে সে দৃশ্য কেউ দেখেনি।
নিহতের স্বজনরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই গফুর মিয়ার এক ছেলে ও তিন মেয়েদের মধ্যে দোকান ভাড়ার টাকা এবং জমি ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। মঙ্গলবার যথারীতি ভাড়াটিয়াদের সাথে লেনদেন নিয়ে ভাইবোনদের সিদ্ধান্তের দিন নির্ধারিত ছিলো। এদিনই সকালে তারা তাদের বাড়িতে গফুর মিয়াকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পায়। পরে তাকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে বোনদেরকে তাদের অংশ থেকে বিতারিত করতে নিহত ছেলে আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে পিতাকে পরিকল্পিতভাবে অভিযোগ উঠেছে। অপর দিকে ভাইও অভিযোগ করছেন বোনেরাই তাকে ফাঁসাতে পিতাকে হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছেন।
নিহতের মেয়ে আসমা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, আব্বার সাথে দোকান ভাড়ার টাকা নিয়ে আর ভাইয়ের মনোমালিন্য চলছিল। বাবাকে না বলেই সে দোকান ভাড়ার টাকা আত্মসাৎ করেছে। আজ দোকান ভাড়ার বিষয়ে আমার বাবা ও ভাই এবং দোকানের ভাড়াটিয়া বসে সমাধান করার কথা ছিল। কিন্তু ধরা পড়ার ভয়ে আমার ভাই বাবাকে মেরে ফেলেছে।
নিহতের ছেলে আব্দুর রহমান বলেন, সকালে আমি বাজার থেকে বাড়িতে ফিরে দেখি বাবা টিউবল তলায় পড়ে আছে। পরে স্বজনদের সহযোগিতায় বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। আমার দুই বোন বিয়ের পরেও আমাদের বাড়িতে থাকে। আমার মনে হয়, সম্পত্তি থেকে আমাকে বেদখল ও বাড়ি থেকে বের করার উদ্দেশ্যেই তারা চক্রান্ত করে বাবাকে হত্যা করছে এবং সেই দায় আমার উপর চাপিয়ে দিচ্ছে।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মাহমুদুল কবির বাসার বলেন, বৃদ্ধ আব্দুল গফুরকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তার মাথায় দুই তিন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।
মাধবদী থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক জুয়েল রানা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে টাকা সংক্রান্ত ও পারিবারিক বিরোধের জেরে বৃদ্ধকে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। হত্যাকান্ডের প্রকৃত কারণ উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেন, বিপিএম জানায়, হত্যাকান্ডের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের ছেলে আব্দুর রহমানকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।