স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীর মাধবদীতে থুতু ফেলার জেরে এক কিশোর খুনের শিকার হয়েছে। তার নাম মোবারক হোসেন ওরফে শাহ আলম। তাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে স্থানীয় কিশোর গ্যাং সদস্যেদের বিরুদ্ধে।
শনিবার রাত আনুমানিক ১২টার দিকে রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই কিশোরের মৃত্যু হয়। এই ঘটনা জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত মোবারক হোসেন ওরফে শাহ আলম (১৭) নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে। সে এবার মাধবদীর এসপি ইনস্টিটিউশনের ছাত্র হিসেবে সদ্য সমাপ্ত এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।
এর আগে শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে মাধবদীর দক্ষিণ বিরামপুর এলাকার আওয়াল মোল্লার চায়ের দোকানের সামনে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলটি দুই জেলা নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জের সীমান্তবর্তী।
নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, শুক্রবার সন্ধ্যায় মোবারক হোসেন ওরফে শাহ আলম বাড়ি থেকে বেরিয়ে আউয়াল মোল্লার চায়ের দোকানের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় মোবারক থুতু ফেললে তা ইয়াসিন নামের এক কিশোরের পায়ের সামনে গিয়ে পড়ে। এতে ইয়াসিন ও মোবারক উত্তেজিত হয়ে উঠলে তাদের মধ্যে তর্কবিতর্ক ও হাতাহাতি হয়। এই ঘটনার পর মোবারক সেখান থেকে চলে যায়।
এর জের ধরে শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ইয়াসিনসহ কিশোর গ্যাংয়ের ১০/১২ জন সদস্য ওই চায়ের দোকানের সামনে উৎ পেতে থাকে। সে সময় দোকানটির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় মোবারকের এর সঙ্গে তাদের তর্কাতর্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে তারা চাপাতি, ছুরি ও দা দিয়ে তাকে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকে। এতে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মোবারক। পরে তাকে ফেলে রেখে তারা পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। সেখানে অবস্থানরত শত শত লোকের চোখের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে মাধবদীর একটি বেসরকারী হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানকার চিকিৎসকরা ওই সময় তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। নিহতের স্বজনরা অ্যাম্বুলেন্সে করে রাত ১০টার দিকে তাকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে গেলে সেখানকার জরুরি বিভাগে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। রাত আনুমানিক ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত কিশোরের চাচাত ভাই সেলিম হোসেন জানান, ইয়াসিনসহ যারা আমার ভাইকে এতো লোকের সামনে কুপিয়ে হত্যা করেছে, তারা প্রত্যেকেই স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। তাদের সবার বয়স ১৫ থেকে ১৭ এর মধ্যে। পায়ের সামনে থুতু পড়ার মত একটি তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে যারা তাকে হত্যা করেছে, আমরা তাদের বিচার চাই।
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকিবুজ্জামান জানান, 'এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি।মামলা প্রক্রিয়াধীন। এরই মধ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত চারজনকে আটক করেছে।'